বাংলাদেশীদের জন্য প্রতিদিন ৪-৬ হাজার ভিসা দিচ্ছে সৌদি আরব সরকার ।
হটাৎ এই ভিসা বৃদ্ধির কারণ কি ??
আপনারা অনেকেই হয়তোবা জানেন।
আগামী ২০৩৪ সালে সৌদি সরকার ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে।
** ইসলাম ধর্মে ফুটবল খেলাকে নিষিদ্ধ করা হলেও , ইসলামের পূর্ণভূমিতে কিভাবে এই খেলার আয়োজন করা হচ্ছে এই ব্যপারে ইসলামি চিন্তাবিদরা কখনোও কি ভেবে দেখেছে ??
২০৩৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন নিয়ে সৌদি আরব প্রতিশ্রুতি বধ্য। তবে এই প্রতিশ্রুতির মধ্যে বিতর্কও আছে। যে ১১টি স্টেডিয়ামে এক দশক পরের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে, তার একটিও এখনো তৈরি হয়নি। এই ১১টি স্টেডিয়ামের মধ্যে একটি স্টেডিয়াম হবে নতুন এক শহরে। সেই শহরও এখনো বানানো হয়নি।
মূলত এই সকল মেগা প্রোজেক্টের জন্য দরকার প্রচুর শ্রমিক।
আমরা অনেকেই জানি মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকদের বড় একটি অংশ আসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এবং বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অন্যতম।
“আধুনিক দাসত্ব” নামে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের সময় একটি লেখা লিখেছিলাম।
সেখানে লিখেছিলাম-কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনে প্রাণ দিতে হয়েছিলো ৬৭৫০ নির্মাণ শ্রমিকের, এরই মধ্য বাংলাদেশী নির্মাণ শ্রমিকের সংখ্যা ১০১৮ জন। মরুভূমির তপ্ত গরমে এদের মৃত্যু হয়েছে বলে- দ্যা গার্ডিয়ান , DW, ESPN সহ অনেক প্রভাবশালী গনমাধ্যমগুলো এই খবর প্রকাশ করলেও কাতার সরকার এই ব্যপারে বরাবরই নীরব ছিলো।
আগামীতে ঠিক এমনি আরও কিছু মৃত্যু অপেক্ষা করছে ।
কাতারে বসবাসরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জেনেছি তাঁদের কোন ট্রেড ইউনিয়ন নেই। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশী ১০১৮ জন শ্রমিক তাঁদের প্রাপ্য টাকা ফিরে পায়নি।
আগামীতে সৌদি আরবও যে এমনটা করবে না তার কোন গ্যারান্টি কি আছে ??
ইতিমধ্যে DW সহ অনেক গনমাধ্যম সৌদি সরকারে হিউম্যান রাইটস নিয়ে খবর করেছে।
আমাদের দেশের সরকার প্রবাসীদের টাকায় বিলাসিতা করলেও প্রবাসীদের সাথে সবসময় অনৈতিক আচরণ করে যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত প্রবাসী কেও মারা গেলে সেই প্রবাসীর লাশ সরকারি টাকায় আনার ব্যবস্থা করা হয় না।
এমনকি সৌদিতে যেতেও ভারতের তুলনাই আমাদের শ্রমিকদের বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে।
সৌদি ফেরত অনেক মহিলা প্রবাসীদের থেকে জানা যায় তাঁদের ওপর সৌদি শেখদের নির্মম নির্যাতনের কথা ।
এমনও শোনা যায় সৌদিতে বাবা- ছেলে মিলে আমাদের দেশের নারী গৃহকর্মীদের সাথে শারীরিক সম্পর্কের মতো নিকৃষ্ট ঘটনা।
এই ব্যাপারে আমাদের সরকার নিশ্চুপ ।
এমকি দিনরাত আমাদের আলেম সমাজ সৌদির ইতিহাস সংস্কৃতি নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য সেমিনার করলেও নারী নির্যাতনের ব্যাপারে কাওকে কখনো মুখ খুলতে দেখা যায়নি ।
যাই হোক, সৌদি সহ মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলো তাঁদের বড় পদের ব্যাক্তিদের আমদানি করে থাকে ইউরোপ আমেরিকা থেকে।
আর আমাদের নেয়া হয় নির্মাণ শ্রমিক, টয়লেট পরিষ্কার আর কামনার তৃষ্ণা মেটাতে।
আগামী সৌদি বিশ্বকাপ হবে আমাদের দেশের শ্রমিকদের রক্তের ফসল।
আমরা কি তাহলে আরও মৃত্যু দেখার অপেক্ষা থাকবো ??
শ্রাবণ রহমান
হামবুর্গ, জার্মানি।