জার্মানিতে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷ আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে বার্তা সংস্থা ডিপিএ এবং এএফপিকে জানিয়েছে জার্মান সংসদের কয়েকটি সূত্র৷
এর ফলে বিভিন্ন সুপার মার্কেটের সামনে রাজনৈতিক দলগুলো তাঁদের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এমনকি রাস্তাগুলোতে দলীয় ব্যানার টানানো হচ্ছে ।
আগাম নির্বাচনের বিষয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ওলাফ শলৎসের “সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি” “এসপিডি” এবং বিরোধী খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী বা “সিডিইউ” দলের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে৷ ওই প্রেক্ষিতেই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে৷
তার আগে গত সপ্তাহে শলৎসের জোট সরকারে ভাঙন দেখা দেয়৷ জোটে থাকা এফডিপির সাংসদ ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে বহিস্কার করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ এর প্রেক্ষিতে জোটের মধ্যে মত বিরোধ তৈরি হয়৷ আর জোট থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নেয় এফডিপি৷
জার্মানির সংবাদপত্র “ডেয়ার স্পিগাল” ইলেকশন রিসার্চ গ্রুপের সর্বশেষ জরিপের তথ্য দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, এই মুহূর্তে “ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন” দলের ৩৩ শতাংশ, কট্টরবাদী “জার্মানির জন্য বিকল্প” (এএফডি) দলের ১৮ শতাংশ, “সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের” ১৬ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে। অপর দিকে পরিবেশবাদী “সবুজ দলের” ১২ শতাংশ এবং “ফ্রি ডেমোক্রেটিক দলের” ৩ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে।
জার্মানির নাৎসি পার্টির মতাদর্শে ২০১৩ সালে সংগঠিত নতুন কট্টরবাদী দল “জার্মানির জন্য বিকল্প” (এএফডি)-র জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
জার্মানিতে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশী সহ অনেক অভিবাসীদের মনে ক্ষীণ সন্দেহ দেখা দিয়েছে যদি “এএফডি” ক্ষমতায় চলে আসে তাহলে অভিবাসীদের এবং আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য জার্মানিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
গতকাল এক প্রচারণা অনুষ্ঠানে “এএফডি” কর্মীর সাথে কথা হলো। সুপার মার্কেটের সামনে তাঁরা আমাকে কিছু লিফলেট দিলো।
আমি তাঁদের কাছে জানতে চাইলাম , তোমরা যদি ক্ষমতায় আসো তাহলে আমরা যারা অভিবাসী তাঁরা কতোটা লাভবান হবো ? এবং আমরা বেশ ভীত তোমাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে।
তিনি আমাকে একটি লিফলেট হাতে দিলেন এবং সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে বোঝালেন (সংযুক্ত)।
তিনি বলেন – “এইখানে যারা অভিবাসী হিসেবে বসবাস করেন তাঁদের জন্য আমরা ভিতকর নয়। বরং যাদের কাজের বৈধতা রয়েছে আমরা তাঁদেরকে স্বাগত জানাই এবং আমরা চাই ভবিষ্যৎ জার্মান গঠনে অভিবাসীরা আরও বেশি ভূমিকা পালন করবে। তবে অভিবাসীদের আমরা একটি নিয়মের মধ্যে আনতে চাচ্ছি”।
“এএফডি” কর্মীর কথা শুনে যা বুঝালাম। কট্টরবাদী এই দলটি ক্ষমতায় আসলে কাজের বৈধতা ছাড়া যেসকল আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসী রয়েছেন তাঁদের জন্য জার্মানিতে থাকা সত্যি কঠিন হবে এবং তাঁরা অনিয়ন্ত্রিত গণ অভিবাসনকে সমর্থন করবে না।
আসাদ সরকার পতনের পর ইতোমধ্যে জার্মান সরকার সিরিয়ান আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের আবেদন বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে জার্মানিতে বর্তমানে বেশিরভাগ বাংলাদেশিরা বৈধ ভাবেই কাজ করে যাচ্ছে, তাঁদের জন্য “এএফডি” বা তার সরকার তেমন ক্ষতির কারণ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
শ্রাবণ রহমান, হামবুর্গ, জার্মানি।