ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন ‘হিন্দুরা সাধারণত দাঙ্গায় ভূমিকা রাখে না।’ গতকাল বৃহস্পতিবার এনডিটিভিকে এসব কথা বলেন তিনি।
কংগ্রেস থেকে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেওয়া হিমন্তের কাছে তাঁর দলের নেতাদের দেওয়া বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়।
এসব বক্তব্যের মধ্যে ছিল দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকারের হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে হিমন্তের দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য ও ২০০২ সালে দাঙ্গাকারীদের শিক্ষা দেওয়া নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেওয়া বক্তব্য।
দিল্লিতে সম্প্রতি শ্রদ্ধা ওয়াকার নামে এক নারীকে হত্যার পর কেটে ৩৫ খণ্ড করার অভিযোগে তাঁর প্রেমিক আফতাব পুনেওয়ালাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ইস্যুতে লাভ জিহাদ নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে এনডিটিভিকে হিমন্ত শর্মা বলেন, ‘যেকোনো বামপন্থী মানুষের কাছে এটি সাম্প্রদায়িক বক্তব্য। তবে আমি জাতীয় অনুভূতি থেকে এমনটা বলেছি।’
মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘লাভ জিহাদ’ বা ভালোবাসার জিহাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছিলেন হিমন্ত শর্মা। মুসলিম পুরুষ হিন্দু নারীদের বিয়ে করে তাদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি ‘লাভ জিহাদ’ নামে পরিচিত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হিমন্ত শর্মা বলেন, ‘এটা নারীদের নিরাপত্তার বিষয়। লাভ জিহাদের প্রমাণ রয়েছে। শ্রদ্ধা ওয়ালকারের হত্যাকারী আফতাব পুনেওয়ালা বলেছিলেন তিনি মনে করেন তাঁর কাজ তাঁকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এর প্রমাণ আছে।’
২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গা নিয়ে অমিত শাহের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হিমন্ত শর্মা বলেন, ‘২০০২ সালের পর গুজরাট সরকার রাজ্যে শান্তির জন্য অনেকগুলো ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। গুজরাটে শান্তি ফিরে এসেছে। গুজরাটে এখন কোনো কারফিউ নেই।’
হিমন্ত আরও বলেন, ‘গুজরাট সরকার যা করেছে, সে জন্য ২০০২ সাল থেকে রাজ্যে শান্তি বজায় রয়েছে। দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত করতে পারি আসামেও শান্তি রয়েছে।’
হিমন্ত বলেন, ‘হিন্দুরা শান্তিপ্রিয়। তারা দাঙ্গায় লিপ্ত হয় না। হিন্দু সম্প্রদায় কখনো দাঙ্গায় লিপ্ত হবে না।’
২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গা চলাকালে তিন দিনে এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। নিহত মানুষের মধ্যে ৮০০ জনের বেশি ছিল মুসলিম। গোধরায় হিন্দু পুণ্যার্থীরা ট্রেনের একটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে ৫৯ জন নিহত হন। এরপর দাঙ্গা শুরু হয়।