শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

ভারতকে বাদ দিয়ে চীনের নেতৃত্বে বাংলাদেশসহ ১৯ দেশের বৈঠক

  • আপডেট : রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৭৪ Time View

ভারত মহাসাগরের বাণিজ্য, বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠকের আয়োজন করেছে চীন। ভারত মহাসাগরের আশপাশের ১৯টি দেশকে ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই ১৯ দেশের তালিকায় নেই ভারত।

তবে বাংলাদেশ সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে এবং সপ্তাহখানেক আগেই চীনের ইউনান প্রদেশের কানমিং প্রদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈঠকটি। স্বাভাবিকভাবে ভারত মহাসাগর সংক্রান্ত বৈঠক অথচ আমন্ত্রিতের তালিকায় নয়াদিল্লি না থাকায় বেড়েছে চাপানউতোর।

রোববার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন এই সপ্তাহে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের ১৯ টি দেশের সাথে একটি বৈঠক করেছে। যেখানে লক্ষণীয়ভাবে অনুপস্থিত ছিল ভারত।

পিটিআই বলছে, চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি (সিআইডিসিএ) নামে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যুক্ত একটি সংস্থা গত ২১ নভেম্বর চায়না-ইন্ডিয়ান ওশ্যান রিজিওন ফোরাম অন ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বিষয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করে।

এতে ভারত ছাড়া ১৯টি দেশ অংশ নেয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সিআইডিসিএ। এতে আরও বলা হয়, ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে ‘শেয়ারড ডেভেলপমেন্ট: থিওরি অ্যান্ড প্র্যাকটিস ফ্রম দ্য পারস্পেক্টিভ অব দ্য ব্লু ইকোনমি’ থিমের অধীনে মিশ্র পদ্ধতিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

আমন্ত্রিত দেশগুলোর তালিকায় ছিল- ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল, আফগানিস্তান, ইরান, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, সিসিলিস, মাদাগাস্কার, মরিসাস, জিবুতি, অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া আরও তিনটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিও এই বৈঠকে অংশ নেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে এই প্রথমবার নয়। করোনা মহামারির মধ্যেও ভারতকে বাদ দিয়ে এশিয়ার অন্য দেশগুলোকে নিয়ে কোভিড টিকার বিষয়ে একটি বৈঠক সম্পন্ন করেছিল বেইজিং।

পিটিআই বলছে, গত বছর ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়াই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সহযোগিতার বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের সাথে একটি বৈঠক করেছিল চীন।

এদিকে চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিআইডিসিএ) নেতৃত্বে রয়েছেন লুও ঝাওহুই। তিনি চীনের সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকি ভারতেও তিনি চীনা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, সিআইডিসিএ-এর লুও ঝাওহুই সিপিসি’র (চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি) লিডারশিপ গ্রুপের সচিব।

সিআইডিসিএ-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বলছে, বিদেশি সাহায্যের জন্য কৌশলগত নির্দেশিকা, পরিকল্পনা এবং নীতি প্রণয়ন করা, প্রধান প্রধান বৈদেশিক সাহায্য সংক্রান্ত বিষয়ে সমন্বয় করা এবং পরামর্শ দেওয়া, বিদশি সাহায্য সম্পর্কিত বিষয়ে দেশের সংস্কারকে এগিয়ে নেওয়া এবং প্রধান প্রধান কর্মসূচি চিহ্নিত করা, তত্ত্বাবধান ও মূল্যায়ন করা ও তাদের বাস্তবায়ন করাই সংস্থার লক্ষ্য।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সফরের সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ‘ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশগুলোর উন্নয়নে একটি ফোরাম’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছিলেন। সিআইডিসিএ বৈঠকটি ওয়াংয়ের সেই প্রস্তাবিত ফোরাম কিনা জানতে চাওয়া হলে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিডিয়াকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, গত ২১ নভেম্বরের বৈঠকটি তাদের কোনও অংশ ছিল না।

সিআইডিসিএ-এর দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২১ নভেম্বরের বৈঠকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীন এবং দেশগুলোর মধ্যে একটি সামুদ্রিক দুর্যোগ প্রতিরোধ এবং প্রশমনে সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে বেইজিং। এছাড়া চীন এই অঞ্চলের দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক, উপাদান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলেও এতে বলা হয়েছে

এদিকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশে বন্দর এবং অবকাঠামোগত খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ভারত মহাসাগর অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে পিটিআই।

এছাড়া চীন দেশের বাইরে প্রথম বারের মতো জিবুতিতে একটি পূর্ণাঙ্গ নৌ ঘাঁটি স্থাপন করেছে। একইসঙ্গে ভারতের পশ্চিম উপকূলের বিপরীতে আরব সাগরে পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর নির্মাণের পাশাপাশি ৯৯ বছরের লিজে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর অধিগ্রহণ করেছে বেইজিং।

এর পাশাপাশি মালদ্বীপে অবকাঠামো বিনিয়োগও করছে চীন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর