মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন

ছেলে প্রতারণার শিকার, সাহায্য চাইলেন ওমর সানি

  • আপডেট : শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৪১ Time View

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়ক ওমর সানী ও নায়িকা মৌসুমী দম্পতির ছেলে ফারদিন এহসান বিট কয়েন ও ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে এক ব্যক্তির সঙ্গে ২ কোটি ৫ লাখ টাকা লেনদেন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ওমর সানি ছেলের প্রতারিত হওয়ার এ ঘটনা তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন। এতে তিনি গণমাধ্যম ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যও চেয়েছেন।

ওমর সানি তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমি একজন ভুক্তভোগির বাবা এবং আমার পরিবার। এই কাজটা আমার ছেলের সাথে করা হয়েছে। লিখেছেন আমার ছেলে ফারদিন।’ অর্থাৎ, ওমর সানির স্ট্যাটাসের বাকি অংশ তার ছেলে ফারদিন লিখেছেন।

ওমর সানির ছেলে ফারদিন জানিয়েছেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এর চার মাস পর সেই ব্যক্তি তার ব্যবসার কথা বলে ফারদিনের কাছ থেকে মূলধন হিসেবে টাকা ধার নেন। কয়েক ধাপে ফারদিন তাকে সর্বমোট ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন।

ওমর সানী ছেলে জানান, এ টাকাগুলো তিনি তাকে দিয়েছেন বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন নিশাত নামে সেই ব্যক্তির কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, এমনকি নেই ব্যবসায়ের বৈধ ট্রেড লাইসেন্সও। এরপর তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান।

ফারদিন বলেন, আমি ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক বিনিয়োগে ধার হিসেবে ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি। তার বিপরীতে তাকে বলেছি যে আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার বিনিয়োগ মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে এবং সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুরো টাকা বুঝে নেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই তার বিভিন্ন বাহানা শুরু হয়।

তিনি আরও বলেন, এটি একটি ব্যবসায়িক চুক্তি একজন ব্যবসায়ীর সাথে আরেকজন ব্যবসায়ীর সাথে। প্রথম মাসে আমিসহ সবাইকেই চুক্তি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলেও তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাহানা। অধিক অর্থ লাভ এর লোভে কোনো অ্যাপস বা সফটওয়্যারে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। আমি এবং তার পাশাপাশি আরও যারা ভুক্তভোগী আছেন সকলেই তাকে একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এ এল এম জিয়াউল হকের ছেলে নতুন একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছে সেই সুবাদেই অর্থ বিনিয়োগ করে। যখন এই ছেলে আমাকে এবং অন্যদেরকে টাকা দিতে ব্যর্থ হন তখন তার বাবার সাথে আমরা দেখা করলে তার বাবা আমাদেরকে আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দেন। তারপর গোপন সূত্রে আমি জানতে পারি তারা সবাইকে একই কথা বলে সবার থেকে কিছু সময় আদায় করে নিচ্ছিলেন।

তার বাবা আমার কাছে পাঁচদিনের সময় চেয়েছিলেন। তিনি সুইজারল্যান্ডে যাবেন সেখান থেকে এসে আমার সঙ্গে মিটিং করার কথা থাকলেও আজও তা হয়নি। বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু আমরা যখন আমাদের টাকা চাচ্ছি তখন তিনি তার পার্টনার সাহিল মোস্তাভি এবং তার স্ত্রী আফরা বাসনিন (যিনি এই পুরো ‘এসসিএএম’ এর মধ্যে জড়িত) দুবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে দুবাই অর্থ পাচার করে। পরে আরও জানা যায়, প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচার করে।

ফারদিন জানান, এই ভণ্ড প্রতারকের ভণ্ডামি দেখে এক মাস আগে তার প্রদানকৃত সব চেকগুলো নিয়ে তাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। সেইসঙ্গে ডিবি অফিসে অভিযোগ দেন। অর্থ পাচারকারীর মূল হোতা সাহিল মোস্তাভি (দুবাই প্রবাসী তবে এখন বাংলাদেশে) এবং প্রতারণা পরিচালনা করতেন নিশাত বিন জিয়া রুম্মান এবং তার স্ত্রী আফরা বাশনিন।

লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা আছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পুরোপুরি ফেরত না দিলে চেকের উপরে এন আই অ্যাক্ট মামলা দিতে বাধ্য থাকিব।

সব শেষে ফারদিন লেখেন, আজকে তার বাবা মা যদি তাকে সুশিক্ষায় বড় করতেন তাহলে হয়তো তাদের নিজেদেরই সন্তানের জন্য এই দিন দেখতে হতো না। আমি এতকিছু লিখছি কারণ আমি চাই শুধু চেকের মামলা নয় প্রতারণা এবং অর্থপাচারের মামলা এ বিষয়টি গণমাধ্যম দিয়ে সাধারণ মানুষ এবং বাংলাদেশ পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এ বিষয়টা যেন উঠে আসে। আপনারা কি চান এই ছেলেকে সময় দিতে যেন সে ৩০ না ৩০০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অর্থ পাচার করে?

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর