রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন

আ.লীগ সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে, আয়নাঘর তার একটা নমুনা:প্রধান উপদেষ্টা

  • আপডেট : বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১২ Time View

আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে, গত সরকার (আওয়ামী লীগ সরকার) আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে সর্বক্ষেত্রে, এটা (আয়নাঘর) তার একটা নমুনা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় আয়নাঘর পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন  শান্তিতে নোবেলজয়ী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে তার সঙ্গে স্থানীয় ও বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য ও ভুক্তভোগীরাও সাথে ছিলেন।

আয়নাঘর পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন টর্চার সেলের ভয়াবহ বাস্তবতা উন্মোচিত হয়েছে। এখানে যা দেখলাম, তা অবিশ্বাস্য। মনে হয় না, এটি আমাদের সমাজেরই অংশ।

তিনি জানান, বহু নিরীহ মানুষকে বিনা কারণে ধরে এনে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রমাণ সাজিয়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অনেককে রাস্তা থেকেও তুলে এনে আটক রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, গুম তদন্ত কমিশনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে এমন আরও ৭০০ থেকে ৮০০টি গোপন টর্চারসেল থাকতে পারে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি, তবে কেউ কেউ বলছেন, এটি ৩ হাজারেরও বেশি হতে পারে।

মুহাম্মদ ইউনূস গুম তদন্ত কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি, এখানে মানবিক অধিকার সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। এই আয়নাঘর পুরো জাতির জন্য একটি ডকুমেন্ট হিসেবে থাকবে।

ভোক্তভুগীদের ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। না হলে এই অধ্যায় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাদের বিচারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা প্রকৃত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত হবে। পরে তাদের অন্যান্য দিক ভাবা হবে

সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা আয়নাঘরের দায়িত্বে ছিল তারা কারও ছেলে, কারও বাবা কিংবা কারও আত্মীয়। আমাদের সন্তানরাই যদি এমন অমানবিক কাজ করতে পারে, তবে সমাজ টিকবে না। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন কোন আয়নাঘর না তৈরি হয়।

তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, এখানে এক ভুক্তভোগীর স্বজন আছেন যার মা নয় বছর আগে নিখোঁজ হয়েছেন। আজও জানেন না তার মাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ঘটনা শুধু নিন্দা জানিয়ে শেষ করা যাবে না। দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার দিতে হবে। এই আয়নাঘরে সবকিছু সংরক্ষণ করা হবে এবং ভবিষ্যতে পাঠ্যপুস্তকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

সবশেষ প্রধান উপদেষ্টা এমন আয়নাঘর মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর