শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

সাজাপ্রাপ্তকে ক্ষমা, রাষ্ট্রপতির একক ক্ষমতা কমানোর সুপারিশ

  • আপডেট : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১২ Time View

আদালতের রায়ে চূড়ান্তভাবে দণ্ডিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এ লক্ষ্যে একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা ও সেই বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বে বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টাকে হস্তান্তর করা হয়। সংস্কার প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মাসদার হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসাইন।

বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে গত ৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।

প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন’ সংক্রান্ত ৬ নম্বর সুপারিশের সার সংক্ষেপে বলা হয়, ‘আদালত কর্তৃক চূড়ান্তভাবে দণ্ডিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বোর্ড প্রতিষ্ঠা, যার সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।’

সংবিধানে ক্ষমা প্রদর্শনে রাষ্ট্রপতির অধিকার
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।’

আইনে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা
দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় বলা হয়েছে-

১. কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে সরকার যে কোনো সময় বিনা শর্তে বা শর্তে তার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত, অংশবিশেষ বা পুরোপুরি মওকুফ করতে পারবে।

২. কোনো দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করতে সরকারের কাছে আবেদন করা হলে সরকার দণ্ড প্রদানকারী বিচারকের মতামত নিতে পারে এবং বিচারের সব নথি পাঠানোর নির্দেশ দিতে পারে।

৩. যেসব শর্তে দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করা হয়েছে, কোনোটি পালন করা হয়নি মনে করলে সরকার সাজা স্থগিত বা বাতিলের আদেশ বাতিল করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে এবং বাকি দণ্ড ভোগ করার জন্য তাকে কারাগারে পাঠানো যাবে।

৪. দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করার শর্ত এমন হবে যা পূরণে সে স্বাধীন থাকবে। কোনো ফৌজদারি আদালত কোনো আদেশ দিলে তা যদি সেই ব্যক্তির স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে বা তার বা সম্পত্তির ওপর দায় আরোপ করে তাহলে এই ধারার বিধান এই আদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

৫. রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা প্রদর্শনে এই ধারার কোনো কিছু হস্তক্ষেপ করবে বলে মনে করা যাবে না।
৬. সরকার সাধারণ বিধিমালা বা বিশেষ আদেশ দিয়ে দণ্ড স্থগিত রাখা এবং দরখাস্ত দাখিল ও বিবেচনার শর্তাবলীর বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর