সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় প্রবাস স্কিম সম্পর্কে কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবহিতকরণ এবং উদ্বুদ্ধকরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে প্রবাসীদের নিয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চলনায় কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। সভার শুরুতে প্রামান্যচিত্রের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতে করণীয় এবং সুবিধাগুলো প্রদর্শন করা হয়।সভায় উপস্থিত প্রবাসীরা পেনশন স্কিমে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া এবং কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন এই বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন। প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রবাসীদের নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হলেও এই পেনশনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিদেশে মৃত্যুবরণ করলে প্রবাসীদের মরদেহ বহনের খরচ, প্রবাসী মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান, প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানদের জন্য বৃত্তি প্রদানসহ বর্তমান সরকারের প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ও সুযোগ-সুবিধা প্রবাসীদের মাঝে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। এবার চলতি অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় প্রবাসীদের অংশগ্রহণ করার সুযোগটি রাখায় ইতিমধ্যে প্রবাসীদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় প্রবাসী বাংলাদেশিসহ চারটি শ্রেণিকে যুক্ত করা হচ্ছে। অন্যরা হলেন: বেসরকারি খাতের চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অস্বচ্ছল ব্যক্তিরা।
সর্বজনীন পেনশনের চাঁদার হার জনপ্রতি মাসিক সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অস্বচ্ছল হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তির জন্য মাসিক চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা। তবে অস্বচ্ছলদের জমা দিতে হবে ৫০০ টাকা, বাকি ৫০০ টাকা সরকার থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে।
অন্যদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য মাসিক চাঁদার সর্বনিম্ন হার পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়া সাত হাজার ৫০০ টাকা এবং দশ হাজার টাকার আরও দু’টি স্কিম থাকবে প্রবাসীদের জন্য। প্রবাসীদের বিদেশি মুদ্রায় এই চাঁদা দিতে হবে। চাঁদার বিপরীতে তারা ২.৫ শতাংশ প্রণোদনাও পাবেন।
প্রস্তাবিত এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হলে একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দিলে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছরের আগে কেউ মারা গেলে তার নমিনী বাকি সময়ের পেনশন পাবেন। এ ছাড়া চাঁদা দেয়ার ১০ বছরের মধ্যে কেউ মারা গেলে জমাকৃত টাকা মুনাফাসহ নমিনীকে ফেরত দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে মিনিস্টার (শ্রম) আবুল হোসেন, ডিফেন্স এটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান নিয়াজ মোরশেদ, প্রথম সচিব (কাউন্সিলর পাসপোর্ট ও ভিসা) ইকবাল আক্তার, সোনালি ব্যাংক প্রতিনিধি লুতফর রহমানসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বাংলাদেশি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মী, কুয়েতে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।