শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৫ অপরাহ্ন

লিসবনের বর্তমান পরিস্থিতি ও আমার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে দুটি কথা

  • আপডেট : বুধবার, ৮ মার্চ, ২০২৩
  • ৯০১ Time View

সাম্প্রতিক সময়ে পর্তুগালের একটি জাতীয় পত্রিকার বরাতে খবর ছড়িয়েছিল ৩১ শে মার্চের মধ্যে ২০২১\২০২২ সালে যারা আবেদন করেছে সবাইকে বৈধকরণ প্রকৃয়া শেষ করা হবে। তার জন্য কভিড ভেকসিনের জন্য ব্যবহার করা ফেভিলিয়ন সমূহকে অস্থায়ী ইমিগ্রেশন কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

উল্লেখ এটি হবে সেফ বা পর্তুগিজ বর্ডার ও ইমিগ্রেশন সার্ভিস বিলুপ্তির পূর্বে একটি ক্লিন শীট দেওয়া নতুন গঠিত প্রতিষ্ঠানকে। প্রস্তাবিত নতুন প্রতিষ্ঠানের নাম হল পর্তুগীজ এজেন্সি ফর মাইগ্রেন এন্ড এলাইলাম সংক্ষেপে APMA হবে। পরবর্তী খবর বেরিয়েছে এটি শুধুমাত্র পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশের মানুষের জন্য বিশেষ একটি উদ্যোগ নিয়েছে।

এই খবরটির ফলে বিপুলসংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী ভিড় করছে পর্তুগালে। তাছাড়া এখন শীতের সময় হওয়াতে এমনিতেই অনেক মানুষের কাজ ও বাসস্থানের সংকট রয়েছে আগে থেকেই। তার উপর এই খবরের ফলে নতুন করে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ যোগ হওয়াতে পরিস্থিতি আরো কঠিন ও ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।

২০১৬ সালের শুরুর দিকে ও এমন পরিস্থিতি দেখেছি লিসবনে। ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে ব্যাপক হারে বৈধতা দেওয়ার ফলে সেই বছরের শেষে এবং ১৬ সালের শুরুতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হয়েছিল। সেই সময়ে থাকা ও কাজের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছিল। আমিও তখন সবে মাত্র পর্তুগালে এসেছিলাম এবং এসেই এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। ফলস্বরূপ একটি সিট না পেয়ে ১৬ দিন রুমের মেজেতে শুয়ে কাটিয়েছিলাম।

পরবর্তীতে এক ভাই দেশে যাওয়াতে ওনার সিটে কিছুদিন ছিলাম এবং প্রায় দুমাস পরে স্থানী ভাবে একটি সিটের ব্যবস্থা হয়েছিল। সেই সময়ের কথা মনে পড়লে এখনো গায়ে শিহরণ জাগে। শুনেছি ২০১৪ সালেও নাকি লিসবনে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি আরো ভয়ানক কারন সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায় একটি ভবনে আগুন লেগে ২ জন ভারতীয় অভিবাসীর মৃত্যু ও অনেক মানুষ হতাহতের ফলে আবাসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের কয়েকটি উপায় হতে পারে। প্রথমে বলবো অবশ্যই ধৈর্য থাকতে হবে এবং যদি পর্তুগালের বৈধতা বা রেসিডেন্ট পারমিট চাই তাহলে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে হবে। সটকাটে কিছু একটা করে ফেলবেন এই মানষিকতা পরিত্যগ করতে হবে। লিসবন মেট্রো বা রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে একটু দূরে থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায় থাকার মন মানষিকতা পরিত্যাগ করতে হবে।

পর্তুগালের এখনো অনেক শহর রয়েছে যেখানে এখনো বাংলাদেশী সহ অভিবাসীদের সংখ্যা অনেক কম। এমন অনেক শহর রয়েছে যেখানো ২০১৮ সালেও তেমন মানুষ ছিল না কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে সেখানে আজ ৩/৪ হাজার অভিবাসী বসবাস করছে। এমন কোন সম্ভাবনা ময় শহর খুজে বের করে সেখানে চলে যেতে পারেন। সেই সব শহরে চাকরির সুযোগ কম থাকলেও কম পুঁজিতে ব্যবসা বানিজ্য শুরু করতে পারবেন।

বর্তমান সময় অথ্যাৎ মার্চ মাসে সব জায়গায় লোকজন নিয়োগ করবে। লিসবন ছাড়াও পর্তুগালের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে অনেক ৩/৪/৫ স্টার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে লোক নিয়োগ করবে। পাশাপাশি যারা কৃষি কাজে আগ্রহী তারাও বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে কাজে চলে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তাছাড়া যাদের টাকা পয়সা রয়েছে তারা ছোট খাট ব্যবসা বানিজ্য শুরু করতে পারেন।

মনে রাখবেন এখানে রেসিডেন্ট পারমিট ছাড়াও Finance এ Individual Activity খোলে অথবা নিজস্ব কোম্পানি খুলে ব্যবসা বানিজ্য করতে পারেন। এখন অনেকে বিভিন্ন ব্যাক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে আসছে যা খুব কম সময়ে সকলের কাছে তাদের পন্য বা সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে। পরিশেষে বলবো ভাগ্য তাদেরই সহায় হয় যারা কঠিন সময়ে ধৈর্য ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরাও এই রকম সময় পার করে আসছি ইনশাআল্লাহ আপনারা ও পারবেন এবং সফলতা আসবে।

রাসেল আহম্মেদ

সাংগঠনিক সম্পাদক , আয়েবপিসি

লিসবন, পর্তুগাল

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর