মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানায়, তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেকের কাছ থেকে তেল কেনা কমিয়েছে নয়াদিল্লি। অথচ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের আগে রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে যা ২৮ শতাংশে এসে দাঁড়ায়।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়া আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম মূল্যে ভারতের কাছে তেল বিক্রি করায় সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতও বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় করছে।
ভারতের তেল আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে ওপেকভুক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে ৮৭ শতাংশ তেল কিনেছে ভারত। ২০২২ সালে তা নেমে আসে ৬৪ দশমিক ৫ শতাংশে। গত বছর রাশিয়ার পর ভারতে শীর্ষ তেল সরবরাহকারী ছিল ইরাক ও সৌদি আরব।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়তে শুরু করে তেলের দাম। দীর্ঘ ৭ বছর পর তা ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে এ দাম পৌঁছায় ব্যারেল প্রতি ১৩৯ ডলারে। তাতে তেল আমদানির খরচ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় ডলারের বিনিময় হারও। তৈরি হয় ডলার সংকট, কমে যায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
ঠিক সেই সময়েই রাশিয়ার তেল আমদানি বাড়ায় নয়াদিল্লি। রয়টার্স জানায়, বর্তমানে ইইউ নির্ধারিত মূল্যসীমার চেয়েও অনেক কম দামে অর্থাৎ প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারের কমে রাশিয়ার তেল কেনা যাচ্ছে। সেই সুযোগ লুফে নেয় ভারত। কিন্তু অনেক দেশ সেই সুযোগ নিতে পারছে না।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপ রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের চেয়ে ছয় গুণ বেশি তেল কিনেছে। তাহলে ভারতের কেন কিনবে না? ইউরোপের সমস্যা ভারতের সমস্যা না। এই যুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকার সম্পর্কের টানাপোড়েন হলেও, এই সমস্যার সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কিন্তু পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা না মেনে রাশিয়ার তেল কেনা বাড়িয়ে দেয়ায় ভারত বড় একটি সংকট এড়াতে পেরেছে বলে মত জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের।