শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৪ অপরাহ্ন

৩৬ বছর পর আবারও বিশ্বসেরা আর্জেন্টিনা

  • আপডেট : সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৩৭ Time View

যে স্বপ্ন বোনা ছিল মেসির হৃদয়ের পাতাল ছায়ায়, যে চাওয়া দাবি হয়ে তারিয়ে বেরিয়েছিল আর্জেন্টিনার নিজস্ব জ্যোতির্ময় আড়ালে- লুসাইলের অমর রাত সবকিছুই তুলে দিল মেসি ও আর্জেন্টিনার হাতে।

ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল আর্জেন্টিনা, যারা এপর্যন্ত ২ বার (১৯৭৮, ১৯৮৬) বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছে। এরপর দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে জয় ছিনিয়ে নিয়ে ফুটবল জগতে ৩ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়লেন লিওনেল মেসির দল আর্জেন্টিনা।

তবে এর আগে এমবাপ্পের সঙ্গে যে অগ্নিপরীক্ষায় তাকে নামতে হলো, ফ্রান্সের ৯৭ সেকেন্ডের দুটি গোলের পর মাঠে যে সমুদ্রমন্থন উঠিয়ে তাকে অমৃত তুলে আনতে হলো, তাতে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সাধ্যি বোধ হয় ফুটবল-ঈশ্বরের ছিল না! শেষমেশ ৩-৩ গোলের ম্যাচ টাইব্রেকে ৪-২-এ হারিয়েই ভুবন জয় করল আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনার পর মেসির হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি- এ যেন স্রষ্টা ও সৃষ্টির আবেগ আর কৃতজ্ঞতার চূড়ান্ত নিদান।

২৩ ও ৩৬ মিনিটে মেসি ও ডি মারিয়ার গোলে ৭৯ মিনিট পর্যন্ত (২-০) গোলে এগিয়ে থেকে জয়ের অপেক্ষায় ছিল আর্জেন্টাইনরা। এরপর মাত্র দুই মিনিটে ২ গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় ২-২ ব্যবধানে ড্র হওয়ার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে প্রথমে গোল করে (১০৮ মিনিটে) আর্জেন্টিনাকে ফের এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি। এরপর মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে (১১৮ মিনিটে) পেনাল্টি থেকে গোল করে হ্যাটট্রিক করার মধ্য দিয়ে ফ্রান্সকে ফের সমতায় (৩-৩) ফেরান এমবাপ্পে।

১২০ মিনিটের খেলা ৩-৩ ড্র হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের ব্যবধানে জিতে তৃতীয় শিরোপা নিশ্চিত করে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

এটা ছিল ফ্রান্সের চতুর্থবার বিশ্বকাপ ফাইনাল। এর আগে ১৯৯৮ সালের পর ২০১৮ সালে শিরোপা জিতে নেয় ফরাসিরা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিল কিলিয়ান এমবাপ্পেদের।

অন্যদিকে আর্জেন্টিনা এ নিয়ে ছয়বার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলে। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাতিন আমেরিকান দলটি।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে আর্জেন্টিনা। এই জয়ের মধ্য দিয় ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটাল আর্জেন্টাইনরা। এর আগে ১৯৩০, ১৯৯০ ও ২০১৪ সালের ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয় সন্তুষ্ট থাকে আর্জেন্টিনা।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে খেলার ২৩ মিনিটে ডি মারিয়াকে ডি বক্সের মধ্যে ফ্রান্সের ফুটবলার উসমান দেম্বেল ফাউল করায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

সেই পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। চলতি আসরে এটি আর্জেন্টিনার অধিনায়কের ষষ্ঠ গোল।

৩৬তম মিনিটে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইনজুরি থেকে ফেরা ডি মারিয়া। তার করা গোলেও মেসির অবদান রয়েছে।

মাঝমাঠে মেসি ছোট্ট এক সুন্দর টোকায় পাস বাড়ান ডান দিকে, বল ধরে হুলিয়ান আলভারেস এগিয়ে গিয়ে সামনে বাড়ান মাক আলিস্তেরকে। তার পাস বক্সের বাঁ দিকে ফাঁকায় পেয়ে কোনাকুনি শট নেন ডি মারিয়া। ঝাঁপিয়ে পড়া ফ্রান্সের লরিসকে ফাঁকি দিয়ে বল খুঁজে নেয় ঠিকানা।

৭৮ মিনিটে কুলো মুয়ানিকে ডিবক্সের ভেতর ফাউল করে বসেন ওতামেন্দি। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে বিশ্বকাপে নিজের ৬ষ্ঠ গোলটি করেন এমবাপ্পে।

এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার গোল করেন এমবাপ্পে। ৮১ মিনিটে দুর্দান্ত ভঙ্গিতে গোল করে দলকে ২-২ এ সমতায় ফেরান এই পিএসজি তারকা।

২ গোল করে ৭৯ মিনিট এগিয়ে থেকেও দুই মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পের করা ২ গোল দারুণভাবে খেলায় সমতায় ফেরে ফ্রান্স।

এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১০৮তম মিনিটে ডান দিক থেকে লাউতারো মার্তিনেসের বুলেট গতির কোনাকুনি শট কোনোমতে ফেরান উগো লরিস, তবে বল হাতে রাখতে পারেননি তিনি। গোলমুখে বল পেয়ে ডান পায়ের টোকায় দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান মেসি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর