বিবৃতিতে তারা বলেছে, চলতি বছর টমেটো, শসা, নাশপাতি ও অন্যান্য ফল এবং শাকসবজির উৎপাদন রেকর্ড হারে কমে যেতে পারে। এর ফলে আগামী দিনগুলোতে খাদ্যের জোগানে সমস্যা তৈরি হবে, যা ইতোমধ্যে ডিমের ক্ষেত্রে দেখা গেছে।
জ্বালানি, সার ও পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধিও কৃষকদের ব্যাপক চাপের মুখে ফেলেছে। হাঁস-মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ও বার্ড ফ্লুর সংক্রমণের ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হাঁস-মুরগি মেরে ফেলায়বর্তমানে বাজারে ডিম ও হাঁস-মুরগির দাম প্রতিদিন বাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
হাঁস-মুরগির খাবারের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে ব্যাপক হারে বেড়েছে পশুখাদ্যের দামও। বাজারে এক কেজি দুধের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। এ ছাড়া পশুখাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে কৃষকরা তাদের গবাদি পশুর বংশবিস্তারেও নিয়ন্ত্রণ আনার পরিকল্পনা করছেন। ফলে অদূর ভবিষ্যতে মাংসের দামও বেড়ে যাবে।
এনএফইউর প্রেসিডেন্ট মিনেট ব্যাটারস বলেন, ‘জ্বালানি, সার ও পশুখাদ্য আধুনিক কৃষির এই অত্যাবশ্যক উপাদানগুলোর দাম যুক্তরাজ্যে বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। আমাদের হিসাব বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় বর্তমানে বাজারে এই তিন উপাদানের মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষির কাঁচামালের দাম অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে খাদ্যপণ্যের বাজারে তার প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে। আমরা যদি কেবল ডিমের বাজারে মনোযোগ দিই, সে ক্ষেত্রে আমি বলব, ডিম উৎপাদনে আমাদের ব্যাপক সাফল্য আছে এবং দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে যুক্তরাজ্য ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণ।’ব্যাটারস বলেন, ‘গত বছর পর্যন্ত আমাদের এই সাফল্য ছিল। কিন্তু প্রতিবছর গড়ে যুক্তরাজ্যের যে পরিমাণ ডিমের উৎপাদন হয়, চলতি বছর তার চেয়ে ৩২ কোটি ডিম কম উৎপাদন হয়েছে।’এ ছাড়া সার ও জ্বালানির দাম বাড়ায় শাকসবজি ও ফলমূলের চাষ রীতিমতো হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানান এনএফইউ প্রেসিডেন্ট। বলেন, আসল ব্যাপার হলো, সরকার খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেবে কি না। যদি সরকার এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে কৃষকরা উৎপাদন কমাতে বাধ্য হবে।
তার মতে, উৎপাদন কম হলে বাজারে পণ্যের জোগান কম আসবে এবং খাদ্যপণ্যের দামও বাড়তে থাকবে। ফলে দেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
খুচরা খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীরা যে চলতি বছর ব্যাপক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তা স্বীকার করেছেন দেশটির খুচরা ব্যবসায়ীদের সংগঠন ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু ওপিয়েও।
তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর খাদ্যপণ্যের পাইকারি ক্রয় বাবদ অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্রিটেনের খুচারা বাজারে দুধ-ডিম-পনির-শাকসবজি-মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের যে দাম, তা গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।