শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন

নেত্রকোনায় বেহাল স্বাস্থ্যসেবা, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

  • Update Time : সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২
  • ৭০ Time View

দেশব্যাপী নানান অবকাঠামো উন্নয়ন লক্ষ করা গেলেও মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম স্বাস্থ্যসেবার বিন্দুমাত্র উন্নয়ন ঘটেনি নেত্রকোনায়।বছরজুড়ে জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য ক্লিনিকে সরকারি খরচে এক্স-রে বা আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারছেন না গ্রামীণ জনপদের মানুষ। বছরের পর বছর ধরে অকেজো হয়ে আছে জেলার ১০ উপজেলার অধিকাংশ এক্স-রে মেশিন। কোথাও কোথাও নেই রেডিওগ্রাফার। ফলে সরকারের টাকায় কেনা মেশিন জং ধরে নষ্ট হচ্ছে, অপচয় হচ্ছে সরকারের পয়সা। বঞ্চিত রাষ্ট্রের নাগরিকরা। যাদের বলা হয় প্রজাতন্ত্রের মালিক।

আবার কোনো উপজেলার হাসপাতালে অদ্যাবধি কেউ দেখেনি এক্স-রে মেশিন চালাতে। সরকারি ফি অনুযায়ী একজন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খরচ সহনীয়। কিন্তু মেশিন নষ্ট অথবা টেকনিশিয়ান না থাকায় মানুষকে হাজার হাজার টাকা গুনতে হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, পাহাড়ঘেরা হাওড় অধ্যুষিত নেত্রকোনা জেলা এখনও অনেক পিছিয়ে স্বাস্থ্যসেবায়। আধুনিকায়নের যুগে এখনও অনেক উপজেলায় নেই রেডিওগ্রাফার। নষ্ট রয়েছে এক্স-রে মেশিন। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি চালু হয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি। উপজেলাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। ফলে কম খরচের সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের লাখ লাখ মানুষ।
 
নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলের বিচ্ছিন্ন এক উপজেলা খালিয়াজুরী। যেখানে কেউ দেখেনি কোনোদিন এক্স-রে পরীক্ষা হতে। ইদানীং চালু করা হয়েছে প্যাথলজিক্যাল নামে মাত্র কয়েকটা পরীক্ষা। এ ছাড়াও কোনো কোনো উপজেলায় রেডিওগ্রাফার থাকলেও নষ্ট রয়েছে এক্স-রে মেশিনটি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের এক্স-রে প্রতিটি বড় ফিল্মে ৮০ টাকা এবং ছোট ফিল্মে বুকের এক্স-রে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। কিন্তু সহজ এ সেবাটি পাচ্ছেন না গ্রাম কিংবা শহরের কোনো রোগীই।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি মাসেই রেডিওগ্রাফার চেয়ে এবং নষ্ট মেশিনের ব্যাপারে ওপর মহলে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার প্রায় ২৫ লাখ জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ উপজেলায় ১০টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। চিকিৎসকসহ নার্সের সংকুলান ঘটাতে কাজ চলছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানান। কিন্তু অনেক উপজেলায় এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম, প্যাথলজি সেবায় নানা সংকট রয়েছে। এর মধ্যে অবহেলিত হাওড় জনপদ খালিয়াজুরীতে নেই রেডিওগ্রাফার। ফলে এ উপজেলার মানুষ কোনোদিনই দেখেননি হাসপাতালটিতে এক্স-রে পরীক্ষা হতে।

থাকলেও তা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে ওই উপজেলার রেডিওগ্রাফারকে দিয়ে আটপাড়া উপজেলার এক্স-রে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

অন্যদিকে বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কেন্দুয়া, পূর্বধলার এক্স-রে মেশিন নষ্ট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। যে কারণে ৬টি উপজেলার মানুষকে সরকারের দেয়া সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।

খালিয়াজুরী উপজেলার শিক্ষক কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, ১৯৯৯ সালে স্থাপিত উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি জন্ম থেকেই তালাবদ্ধ দেখে আসছেন। তাই হাওড়পারের মানুষকে বাধ্য হয়েই জেলা শহরের  ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এক্স-রে করাতে হয়। এতে তাদের গুনতে হয় অনেক টাকা। পাশাপাশি রোগী নিয়ে আসা-যাওয়ায় সময় ব্যয় হচ্ছে। থাকা-খাওয়ার জন্য গুনতে হয় বাড়তি টাকা।

নেত্রকোনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা বলেন, ‘প্রতিমাসে আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category