শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

বিশ্বকাপে যে কৌশলে খেলতে পারেন নেইমাররা

  • Update Time : রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৩৪ Time View

‘ব্রাজিলিয়ানরা ফুটবল খায়, ঘুমায় এবং পান করে।’ কথাটা ফুটবল কিংবদন্তি পেলের। ফুটবল ও ব্রাজিল এমন সমার্থক! ফুটবল ব্রাজিলিয়ানদের কাছে এতটাই ভালোবাসার যে ‘মারাকানোজ্জো’ বা ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে হারকে তাঁরা হিরোশিমা-নাগাসাকির মতো বিপর্যয় মনে করেন। অথচ সেই ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতে না ২০ বছর।

২০০২ সালের ফাইনালে রোনালদো নাজারিও-রিভালদোদের উপহার দেওয়া জাদুকরী মুহূর্তের পর আর কখনো ফাইনালেই ওঠা হয়নি লাতিন দেশটির। এবার কি হবে? সময় ভালো উত্তর দেবে। তবে শক্তিশালী এক দল নিয়েই এবার বিশ্বকাপ অভিযানে যাবে ব্রাজিল।প্রশ্ন হচ্ছে, কাতারে ‘হেক্সা’ বা ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে কেমন হবে ব্রাজিল কোচ তিতের কৌশল? রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর কৌশলে বেশ পরিবর্তন আনেন অভিজ্ঞ এই কোচ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দলের অনেক কিছুই তিনি বদলে ফেলেন। দলকে প্রস্তুত করেন কাতারের জন্য। কাতারে কেমন হতে পারে তিতের সম্ভাব্য কৌশল, তা নিয়েই এই বিশ্লেষণ।সাম্প্রতিক অতীতে নিজের কৌশলে স্থির থেকে তিতে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ব্রাজিল দলে গত কয়েক বছরে ইউরোপিয়ান ফুটবলে আলো ছড়ানো বেশ কিছু নাম উঠে এসেছে। তিতে চেষ্টা করেছেন প্রত্যেকের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা পরখ করে দেখতে। যেখানে তাঁর লক্ষ্য ছিল দলের একটি সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ রূপ দাঁড় করানো।

তিতের দলকে খেলানোর ধরন মূলত নির্দিষ্ট একটি কাঠামোর ভেতরে নানা ধরনের বৈচিত্র্যময় বিষয়ের সমাবেশ ঘটানো। ধরা যাক, কোনো একটা ম্যাচে ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলা শুরু করল দল। তবে খেলা চলাকালেই এটি ক্রমাগত বদলাতে থাকে।
কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলাপে যাওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক, কেমন হলো ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দল। গোলরক্ষক হিসেবে তিতের ১ নম্বর পছন্দ লিভারপুল তারকা আলিসন বেকার।

ব্যাকলাইনে দানিলো, থিয়াগো সিলভা, মার্কিনিওস ও অ্যালেক্স সান্দ্রো হবেন তিতের প্রথম পছন্দ। বিবেচনায় থাকতে পারেন অ্যালেক্স তেলেসও। মিডফিল্ডে দুই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা কাসেমিরো ও ফ্রেদের ওপর আস্থা রাখবেন তিতে। একটু সামনে থাকতে পারেন লুকাস পাকেতা।২০১৮ সালের বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর তিতে নিজের কৌশলে কিছু পরিবর্তন আনেন। তিনি এর পর থেকে পজিশন (বল দখল) ধরে রাখার মধ্যে পজিশনাল প্লে সিস্টেম (ত্রিকোণাকৃতি বা ডায়মন্ড আকৃতি তৈরি করে সামনের দিকে এগোনোকে বোঝায়) তৈরি করেন। পজিশনের ক্ষেত্রে বলসহ এবং বলছাড়া দুটি ক্ষেত্রেই ব্রাজিল দারুণভাবে সংগঠিত থাকে। যে ম্যাচে ব্রাজিল এই কৌশল পুরোপুরিভাবে মাঠে প্রয়োগ করতে পারে, সেদিন প্রতিপক্ষের জন্য মাঠে খুব কম জায়গাই ফাঁকা থাকে।

আবার অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বীদের এলোমেলো রক্ষণের সুযোগ নিয়ে এবং নিজেদের শক্তিশালী উইংকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ফাঁকা জায়গা থেকে অরক্ষিত বক্সে ঢুকে পড়েন ফরোয়ার্ড লাইনের খেলোয়াড়েরা। এর ফলে নেইমারের জন্য দারুণ সব গোলের সুযোগ তৈরি হয়।

ব্রাজিলিয়ান কোচের এসব কৌশলের মধ্যমণি হবেন নেইমার। যিনি ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এই বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ নিজের শেষ ম্যাচ মনে করে খেলতে নামবেন। তবে ব্রাজিলের জন্য বড় সুসংবাদ হচ্ছে নেইমারের দারুণ ছন্দ। মৌসুমের শুরু থেকে গোল করে এবং বানিয়ে দিয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন পিএসজি তারকা। এখন কেবল মাঠে ঠিকঠাক অনুবাদের অপেক্ষা। তবে একক প্রচেষ্টায় ম্যাচ বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিনিসিয়ুস, রাফিনিয়ারাও নেইমারের মতো সমান কার্যকর।

আর হালের যে প্রেসিং ফুটবল, তার সঙ্গেও ব্রাজিল দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে। তবে সব ছেড়েছুড়ে তারা প্রেস করতে মরিয়া হয়ে থাকে না। তারা মূলত নিজেদের মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক রেখেই প্রেস করতে যায় এবং চেষ্টা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বল পুনরুদ্ধার করতে।

বিশ্বব্যাপী কোটি ভক্ত ব্রাজিলকে স্বরূপে দেখার অপেক্ষায় আছে। যে ব্রাজিল ও বিশ্বকাপ শিরোপা সমার্থক হয়ে গিয়েছিল, তারা পর্দার অন্তরালে গেছে অনেক দিন। সেই অপেক্ষা কি এবার ফুরাবে? সামর্থ্য ও শক্তি কোনোটাই কম নয়। তবে অনেক সময় ব্রাজিল ওভার প্লে করে। অর্থাৎ, বেশি কারিকুরিতে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। বিশ্বকাপে চাপের মুহূর্তে আবার তালগোল পাকানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category