অধিকাংশ দোকানে টাকা দিয়েও মিলছে না মোটা চাল। হু হু করে বাড়ছে দাম। মহল্লার দোকানে মোটা একেবারেই অপ্রতুল। চালের আড়ত কিংবা বড় বাজারেও সাত দোকান ঘুরে মিলছে এক দোকানে। এতে চরম বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাধ্য হয়ে তারা বেশি দামে মাঝারি মানের চাল কিনছেন পেটের তাগিদে। আড়তদাররা বলছেন, মিলাররা মোটা চাল সরবরাহ করছেন না। যাদের কাছে মিলছে দাম হাঁকছেন বেশি। আর অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আঙুল মজুতদারদের দিকে। এ সংকট কৃত্রিম হতে পারে বলে ধারণা তাদের ।
মহাখালীর সাততলা বস্তির একটি টিনশেড ঘরে চার সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন আনোয়ার হোসেন। পেশায় রিকশাচালক। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে আমতলী বাজারে চাল কিনতে যান আনোয়ার। চার-পাঁচটি দোকান ঘুরে কোথাও মোটা চাল পাচ্ছিলেন না। পরে একটি দোকানে মোটা চাল পান। ৫৬ টাকা দরে কেনেন পাঁচ কেজি।
আলাপকালে আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে যে কোনো মুদি দোকানে মোটা চাল পাওয়া যেত। কিন্তু কয়েক মাস ধরে মুদি দোকানে মোটা চাল পাওয়া যাচ্ছে না। এখন বাজারে গিয়েও চালের বড় দোকান বা আড়তে মোটা চাল মেলে না, যা পাওয়া যায়, দাম বেশি রাখে। আবার বেশি দামের কারণে মাঝারি বা সরু চালে তো হাতই দেওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে নিম্নআয়ের মানুষকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।আমতলী বাজারে বড় সাতটি মুদি দোকানে চাল বিক্রি হয়। এর মধ্যে পাঁচটি দোকানেই মোটা চাল (স্বর্ণা, চায়না, ইরি) দেখা যায়নি। দোকানিদের দাবি, বাজারে মোটা চালের সরবরাহ কম। তাই সংকট তৈরি হয়েছে। এতে অনেক দোকানি বাধ্য হয়ে কেজিতে দু-এক টাকা বাড়িয়ে চাল বিক্রি করছেন। নিরুপায় হয়ে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ চাল কিনছে। তবে মাঝারি ও সরু চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।মিলারদের কারসাজিতে বাজারে মোটা চালের সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন আমতলী বাজারের মতিউর রাইস এজেন্সির মালিক মতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন অজুহাতে বাজারে চালের সংকট তৈরি করেন মিলাররা। এখন মাঝারি ও সরু চাল বাজারে পাওয়া গেলেও মোটা চালের সংকট রয়েছে। রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে মোটা চাল নেই বললেই চলে। কিছু দোকানে মিললেও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়। অথচ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩ নভেম্বর ঢাকার বাজারদরে মোটা চাল পাইকারি ৪৩-৪৪ টাকা এবং খুচরায় ৪৭ থেকে ৫০ টাকা।