শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

গ্যাস সংকট-লোডশেডিংয়ে গাজীপুর কারখানায় উৎপাদনে ধস

  • Update Time : শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২
  • ১১৪ Time View

গাজীপুরে প্রতিদিন ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বিভিন্ন কলকারখানায় উৎপাদনে ধস নেমেছে। শিল্প মালিকরা এক প্রকার লোকসান দিয়ে কোনোমতে কারখানা টিকিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে গাজীপুরে লোডশেডিং কম হওয়ার কথা থাকেলেও তা মানা হচ্ছে না। এমনকি শিডিউল মেনে ও আগাম তথ্য দিয়ে লোডশেডিং করার যে ঘোষণা সরকার দিয়েছে- তাও এখানে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিল্প মালিকদের। এ অবস্থায় বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন একেবোরেই কমে এসেছে। ফলে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন শিল্প মালিকরা।

বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস সংকট। দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কালিয়াকৈর, ভোগড়া, কাশিমপুর, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের সংকট লেগেই আছে। বারবার তিতাস কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত সংকট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়নি তিতাস।

এসব বিষয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বায়ারদের দেওয়া অর্ডার ঠিক মতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে কারখানাকে। ঠিকমতো পোশাক সরবরাহ করতে না পারলে শ্রমিকদেরও বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। ব্যবসায়ীরা উৎপাদন ধসের জন্য বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস সংকটকেও দায়ী করেছেন। কারখানার বয়লার চালাতে যেখানে ১৫ পিএসআই প্রেসার দরকার সেখানে অনেকসময় তা নেমে এক বা দুই পিএসআইয়ে দাঁড়ায়। এসময় কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজীপুরে প্রায় দুই হাজারের মতো শিল্পকারখানা থাকলেও এসব কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চাহিদা ও প্রাপ্তির বিস্তর ফারাক থাকায় শিল্প, বাণিজ্য ও আবাসিকে বিদ্যুৎ সংকট থেকেই যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

এদিকে, গত ১৮ জুলাই মধ্যরাত থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং পদ্ধতি চালু হওয়ার কথা থাকলেও গাজীপুরে লোডশেডিং চলছে আগের নিয়মেই। যখন ইচ্ছে বিদ্যুৎ যায়, আসেও ইচ্ছেমাফিক। সারাদিন দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের কারণে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।

গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬৫০ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে প্রায় অর্ধেক পরিমাণ। বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকার কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে দফায় দফায়।গাজীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর সিনিয়র জিএম যুবরাজ চন্দ্র পাল জানান, ১৫৫টি ফিডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো হয়। এর মধ্যে ১০০টি ফিডারে শিল্পকারখানা রয়েছে। বাকিগুলো আবাসিক। শিল্পকারখানায় লোডশেডিং না করার জন্য সরকারের নির্দেশনা থাকলেও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে তা পুরোপুরি মানা সম্ভব হচ্ছে না।বিদ্যুতে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের কারণে ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের বিদ্যুতের ব্যাকআপ থাকলেও ছোট প্রতিষ্ঠানে তা নেই। এর ফলে আরও বেশি সমস্যায় পড়েছেন ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।কয়েকজন কারখানা মালিক  জানান, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কারখানা মালিকদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়বেন হাজার হাজার শ্রমিক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category