শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

ঝড় গেছে, উপকূলে চলছে ক্ষত মোছার লড়াই

  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৮০ Time View

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে চলতি বছরই বাংলাদেশে বন্যা প্রায় লাখ কোটি টাকার ক্ষতি করে হয়েছে, এর মধ্যেই আঘাত হানল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ঝড়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক চিত্র না মিললেও এতে যে হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতির মুখে যে পড়তে হচ্ছে তা অনুমান করাই যায়।

ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাকা, আধাপাকা আমন ধানের। বিধ্বস্ত প্রায় পাঁচশো ঘর-বাড়ি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২শ ঘর-বাড়ি। আর জলাবদ্ধতার কবলে বরিশাল নগরী।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলী এলাকাসহ অন্তত ১৫ জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পাকা, আধাপাকা আমন ধানের। ঝড়ো বাতাসে ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়ায় এবং ক্ষেতে পানি জমায় উৎপাদন ব্যাহতের পাশাপাশি লোকসানের শঙ্কা করছেন চাষিরা। ক্ষতির পরিমান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে কৃষি বিভাগ।

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ৮৫০ হেক্টর জমির আমন ধান। এছাড়া ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে হয়েছে মাছের ঘেরসহ অন্য ফসলের। এ ছাড়া ক্ষতির মুখে মাদারীপুরে ৫’শ হেক্টর জমির পাকা, আধাপাকা আমন ধান।

মেহেরপুর ও যশোরে বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে নুয়ে পড়েছে পাকা আমনের ক্ষেত। তবে কৃষকদের বেশি শঙ্কা সদ্য শীষ বের হওয়া ধানের ক্ষতি নিয়ে।

লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি ও কোমলনগরে তলিয়ে গেছে অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমির আধাপাকা আমন ধান। নোয়াখালীর উপকূলীয় তিন উপজেলা হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমনের। এতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

এছাড়া, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ঝিনাইদহ, শেরপুর, সাতক্ষীরা, বরগুনা, ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় আমন ধানের ওপর ঝড়ের প্রভাব পড়েছে অনেক বেশি। ক্ষতির পরিমান নিরূপন ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভোলা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর আঘাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভোলার ঢালচর, চরসপাতিলা এবং চরনিজান এলাকা। চরফ্যাশনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, এসব এলাকার অন্তত পাঁচশো ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২শ ঘর। কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় অসন্তোষ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

তারা বলছেন, গত ৩০ বছরে এমন ঘূর্ণিঝড় দেখেননি। এসব এলাকায় প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভোলার চরের বাসিন্দাদের মতে, আগের অনেক ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে সিত্রাং ছিল বেশি শক্তিশালী।
ঝড়ের কবলে জলাবদ্ধতায় বরিশাল
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের দাপটে জলাবদ্ধতার কবলে বরিশাল নগরী। বেশিরভাগ সড়ক, অলি-গলিতে পানি থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারনেই এই দুর্ভোগ অভিযোগ নগরবাসীর।

সিত্রাংয়ের প্রভাবের পর থেকে টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হতে থাকে বরিশাল নগরীর নিচু এলাকা। এরপর পানি জমে তলিয়ে যায় বগুরা রোড, বটতলা, নবগ্রাম, কাজিপাড়া, করিম কুঠি, গোরস্থান রোডসহ বিভিন্ন অলি-গলি। বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।

মঙ্গলবার বৃষ্টি কমে আসলেও পানি না নামায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, পানিবন্দি হয়ে পড়েন বেশকিছু এলাকার বাসিন্দারা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ায় এমন দুর্ভোগ অভিযোগ এলাকা বাসীর।অতিবৃষ্টিতে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সিটি করপোরেশনের এই কর্মকর্তা জানান, পানি নিষ্কাশনে কাজ করছে একাধিক দল। জমে থাকা পানিতে নগরীর রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর